বিড়ালের সন্তান প্রসব করার গর্ব প্রচার।
বিকাল ৪টার থেকে রাত ৮টা মাঝখানে কেটে যায় ৪ ঘন্টা।
বিড়াল মাতাটি ২৩/০২/২০২৫ ইং তাং সন্তান প্রসব করার পর তার ৪টি সন্তানের সেবা সুশ্রসা করেন টানা ২৪ ঘন্টা। এর মধ্যে একবারও নিজের খাওয়ার দিকে খেয়াল নাদিয়া বাচ্চাদেরই খাইয়েছেন। এর পর নিজে নিজে খাবার খান তাও বাচ্চাদের নিয়া তার অবস্থানকারী স্থানে।
২৪/০২/২০২৫ ইং তাং সকাল ১০টার সময় আমি সেখানে গেলে আমাকে দেখেই তার ক্ষুধার জ্বালাটা নরাচরা দিয়ে ওঠে শুরু হয় তার খাবার দাবীর স্লোগান। ফ্রিজ থেকে তার খাবারের একটা পোটলা নামিয়ে ঠান্ডা ছাড়ানোর জন্য তার পাতিলে করে একটু পানি দিয়ে চুলায় দিয়া হালকা গরম করি। অতপর ঐ খাবার গুলো তার বাটিতে উঠিয়ে তার জন্য নির্ধারিত খাবারের স্থানে দিয়ে রাখি। ঐ জায়গাটা তার বর্ত মান অবস্থানের স্থান থেকে একটু দূরে হওয়াতে তিনি সেখানে না গিয়ে বাচ্চাদের আগলে শুয়ে থাকেন। যার জন্য আমি খাবারের বাটিটা তার অবস্থান করা স্থানের পাশে ফ্লরে রেখে দেই। কেন জানিনা তিনি এই টুকুন সরে বাচ্চাদের মুখের খাবার ছাড়িয়ে, নিজের খাবার খাইতে আসতে রাজীনা।
নাকি তার মা হওয়ার অহংকারে তার মনে এই বাসনা জেগেছে যে, আমি সুস্থ সবল ৪ টি বাচ্চা দিয়েছি তাতেতো আমি আমার বাচ্চাদের সাথে অবস্থানের স্থানে শুয়ে বসে খাবার খাওয়ার অধিকার রাখি।
অগত্যা কি আর করা এবার খাবারের পাত্রটা তার বাচ্চাদের সাথে থাকা অবস্থানের স্থানে তার সামনেই বসিয়ে দেই।
(এখানে আরো একটা কথা বলে রাখি। বাজারে দোকানীরা মুড়গির উধষ্টি যেই অংশ গুলো বিক্রি করে তার মধ্যে থাকে-গিলা কলিজা, মাথা, চামড়া, পাখনার আগা, পুটকি/পুন্দুরী ও ঠং। কোন কোন দোকানী সবটা একত্রেই বিক্রি করে থাকে। কেউ আবার প্রতিটা অংশ আলাদা আলাদা ভাবেও বিকি করেন। তবে গিলার সাথে কলিজা একত্রে থাকলেও পাখনা আর পুটকি/পুন্দুরী আলাদা থাকলেও ঐ দুইটা একত্রে রেখেই বিক্রি করার চেষ্টা করে। এই সব কেনাকাটায় বর্তমানে আমি দোকানিদের কাছে একটু পরিচিত হওয়াতে চাইলে পাখনার থেকে পুটকি/পুন্দুরী গুলো বাদ দিয়েও কিনতে পারি। কেননা আমাদের বিড়ালটি শুধু ঠ্যাং আর পাখনাটাই খাইতে পছন্দ করে, বাকী অংশ গুলোর কোনটাই খায়না। মাছ খাইলেও তুলনামূলক ভাবে দাম একটু বেশী হওয়ার কারণে বিড়ালটির জন্য আলাদা করে মাছ কেনা হয়না। তবে আমাদের খাওয়ার জন্য মাছ পাক করা হইলে তার উদবিষ্ট অংশ দেওয়া হয়। তার মধ্যে যতটা তার মন চায় ততটা খায়, তাতে না হইলে কিছুটা মাছও দেওয়া হয়। কিন্তু ছোট তথা গুড়া মাছও সে খায়না)।
বিড়াল মাতার খাবার গ্রহন, যা দেখে আমি হতবাগ হয়ে যাই যে, মায়ের কতটা মমতা থাকলে এমনটা করতে পারে। পেটে এতোটা ক্ষুধা রেখেও বাচ্চাদের ছেড়ে এইত ওখান থেকে এখানে এতটুকুনও সরতে পারলনা। তাওকি তার এতটাই ক্ষুধা ছিল যে, নিত্যদিনের মেইল মাফিক পুটলি করা খাবারটা সে অল্পক্ষনের মধ্যেই উদর জাত তথা খেয়ে ফেলল। তাতেও তার ক্ষুধা নিবারন হইল না যার জন্য আরো একটা পুটলি নামিয়ে ঠান্ডা ছাড়িয়ে আবারও তার সামনে দেই। যার সবটা খাবারই সে খেয়ে পরিতৃপ্ত হয়ে ঐ অবস্থাতেই শুয়ে থাকে। এভাবে সে বাচ্চাদেরকেও তৃপ্তিভরে খাইয়ে বিকাল ৪টার দিকে ঘর থেকে রেড়িয়ে যায়। এখানেও একটু অবাক হলাম। কেননা যেই ‘মা’ তার সন্তাদের ছেড়ে সর্বচ্চ ১০ ইঞ্চি দূরে গেলোনা বা যাইতে পারলনা। সেই ‘মা’ ঐ বাচ্চাদের এইভাবে একা ফেলে পুরোপুরি ভাবে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো কোথায়। ভাবলাম হয়ত প্রকৃতির ডাকে পায়খানা প্রশাব করতে গিয়েছে। আবার ভাবতে থাকি তা কি করে হয়, সেতো সব সময় বাথ রুমে গিয়াই এইসব কাজ সারে তবে গেলো কোথায়। তার পিছনে না ছুটে অপেক্ষায় রইলাম।সেই বিকাল ৪টার দিকে বিড়ালটি ঘর থেকে বেরিয়ে যায়, ফিরে আসে রাত ৮টায়। বিড়ালটি ফিরে আসার পরে তার খাবার দেই। তবে এবার তার খাবার ঐ আসনে না দিয়া পাশেই নিচে রেখে দেই। রাতের দেওয়া খাবার ঐখান থেকে একটা একটা করে উঠিয়ে নিয়া বাচ্চাদের কোলেনিয়াই খাইতে থাকে আর পুরা খাবরাটা সে রাতেই শেষ করে।
বিকাল ৪টার থেকে রাত ৮টা মাঝখানে কেটে যায় প্রায় ৪ ঘন্টা
খাবারের যথেষ্ট যোগান থাকা সত্যে সদ্য জন্ম নেওয়া চোখ না ফোটা বাচ্চাদের ফেলে বিড়াল মাতাটি ৪ ঘন্টা সময়কাল ছিল কোথায়। যেকিনা বাচ্চাদের ফেলে এক মুহুর্ত সরতে পারতনা, সেই ‘মা’ এমন সময় দীর্ঘ ৪ ঘন্টা কোথায় ছিল।
এই নিয়া নানান ভাবনা মনের দোড়ে একের পর এক উদাহরণ উপস্থিত হইতে থাকে। প্রকৃতির ডাকে পায়খানা প্রশাব করতে যাওয়া। না সেইটা হইতে পারেনা। কেননা তাতেতো এতোটা সময় লাগার কথা না। তাহলে কি বাচ্চা প্রসব করে বিড়াল মাতাটি যে গর্বের অধিকারী হয়েছে। হয়ত সেই খবর তার একান্ত সঙ্গির থেকে আরো সঙ্গিদের সাথে শেয়ার করার জন্য গিয়েছিল। তবুও ভাবতে থাকি, তেমনটাওতো হওয়ার কথা না। কারণ তাতেও তো সে যতটা সময় বাহিরে থেকেছে অতোটা সময় লাগার কথা না। তবে কোথায় গিয়েছিল, এতোটা সময় কোথায় কাটাইল।
অতপর বিড়ালটি নিচের থেকে একটা একটা করে মুখে করে খাবার নিয়া উপরে বসে খাইতে থাকে।
অতপর পূর্বের নিয়মে তার খাবার দিয়ে আমি আমার রুমে চলে আসি।
(এইখানেও বলে রাখি যে, বিড়ালটি আগে আমাদের সব রুমে থাকলেও বাচ্চা দিয়েছে আমার মেয়ে মেয়ে সাবরিনা মমতাজ তন্নীর রুমে। মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়াতে সে এখন শ্বশুর বাড়ীতেই থাকে। যার জন্য এই রুমটিতে এখন থাকে আমার ছোট ছেলে ইকবাল হাসান তন্ময় । বাসায় মেহমান এলে সে তার রুম ছেড়ে চলে যায় আমার বড় ছেলে খোশনূর আলম টুটুলের রুমে। ২ মাস আগে গ্রামের বাড়ীতে থাকা আমার শাশুরীর ঠ্যাং ভেঙ্গে গেলে ঢাকায় এনে পঙ্গুতে ১০ দিনের চিকিৎসা শেষে ১ মাসের জন্য রিলিজ দিলে আমাদের বাসায় আনা হয়। শাশুরী এখন এই রুমেই থাকেন। এই কয় দিনে বিড়ালটি আমার শাশুরীর সাথেও বেশ সখ্যতা গড়ে তোলে। হয়তোবা সেই জন্য বিড়ালটি তার বাচ্চাদের জন্য এই রুমটাকেই বেছে নিয়েছে। যার জন্য আমি সব সময় নয়, মাঝে মধ্যে ঐ রুমে যাই)।
১০ টায় খাবার দেওয়ার অনেকক্ষণ পর আবার ঐ রুমে গিয়ে দেখি বিড়ালটি এবং তার বাচ্চা গুলোও সেখানে নাই। আর খাবারের বাটিটা সেখানেই পরে আছে। শাশুরী জানাইল বিড়ালটায় বাচ্চা গুলো মুখ দিয়ে কামরে বারান্দায় নিয়া গেছে।
বারান্দায় গিয়া দেখি, বারান্দার শেষ প্রান্তে পুরানো একটা চেয়ারের নিচে সব গুলো বাচ্চা জরাজরি করে শুয়ে আছে কিন্তু মা বিড়ালটা সেখানে নাই।
আবার কিছুক্ষন পরে সেখানে গিয়া দেখি মা বিড়ালটি এসে বাচ্চাদের দুধ খাওয়াচ্ছে।
এভাবে বাচ্চাদের রেখে সে কিছুক্ষণ পর পরই বাহিরে চলে যায়।
এরই মধ্যে আমাদের পাকের জন্য মাগুর মাছ কাটা হয় ঐ মাছের টোটলার অংশ থেকে যাসবুরা দিয়ে কেটে কাটা আলাদা করে আলাদা একটা পিরিজে বিড়াল মাতাকে খাইতে দেই।
অতপর আমার স্ত্রী বলে বাচ্চা দেওয়ার পরে বিড়ালটি অনেক ক্লান্ত ও একটু বেশী ক্ষুধার্থ তাই। যেহেতু আমরা আমাদের জন্য মাগুর মাছ কাটতেছি তাই তার থেকে মাছের এই লেঞ্জাটা খাইতে দিলে ভালো হয়। যদিও আগের থেকেই এই বিড়ালটির খাবারের বিষয়ে আমার স্ত্রী ই বেশী খেয়াল করে খাবার দেওয়ার জন্য তাড়িগ দিয়ে থাকেন।
তখন অনুমান করতে পারলাম যে, গতকালকের সেই ৪ ঘন্টা বিড়ালটি কেন বাহিরে ছিল।-এই ৪ ঘন্টা বাহিরে থেকে সে খোজ করে দেখেছে তার সন্তানদের আর কোথায় রাখা যায়। তেমন কোন জায়গা নাপাওয়াতেই হয়ত আতুড়ঘর পরিবর্তনের জন্য এখনকার মতন বারান্দায় রেখে আবারো নতুন আরো কোন জায়গা খুজতে গিয়েছে।
আজও ঠিক একই ভাবে কিছুক্ষণ পর পরই বিড়াল মাতা তার সন্তান-দের ভবিষৎ নিয়া ব্যস্ত হয়ে বার বার এভাবেই বেড়িয়ে পরে।
মা বিড়ালটি এখন অনেকটা সময় সন্তানদের থেকে একটু দূরে দূরে থাকে।
আজ ২৬/০২/২০২৫ ইং তাং সকাল ১০ টা
No comments