হোকনা পশু তবুও তো সে “মা”
আমার ঘরের বিড়ালটার মা হওয়ার ঘটনা নিয়ে লেখা।
আজ ২৩/০২/২০২৫ ইং তারিখ রোজ রবি বার, সকাল ১০ টার দিকে আমাদের বিড়ালটি ৪ টি বাচ্চা দিয়েছে। বিড়াল বাচ্চা দিয়েছে শুধু সেই জন্যই এই পোষ্টটা দেই নাই।
এই পোষ্টটি দেওয়ার বিশেষ কারণ এবং লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো “মায়ের মমতা”।
বিড়ালটি বাচ্চা দেওয়ার পূর্ব ক্ষণে যা করেছে তা আমাকে নিয়তিমত ভাবে হতবাগ করেছে।
কেননা বিড়ালটি যখন বাচ্চা প্রসব করবে তখন এর প্রসব বেদনার অস্থিরতাটাতা যে কি রকম হইতে পারে সেইটার সঠিক বর্ণনা কেহই দিতে পারবেনা।
তবে এখানের বিষয়টা আরো একটু অন্য রকম বিষয় নিয়ে লেখা।
তা হলো বিড়ালটির বাচ্চা প্রসবের বিষয়টা বুঝতে পেরে আমার স্ত্রী তার জন্য বেলকনিতে কাপড় বিছিয়ে জায়গা করে দেয়।
কিন্তু সে কোন মতেই ঐখানে বাচ্চা দিতে রাজী হইতেছেনা।
যার জন্য বিড়ালটাকে সেখানে বসিয়ে দিলেও সে থাকেনা।
যার জন্য আরো একটু চেষ্টার লক্ষে বেলকনির দড়জা বন্ধ করে দেওয়া হইলে তার বিলাপ থামেনা।
উপায় না পেয়ে দরজা খুলে দেওয়া হইলে দৌড়ে রুমে ঢোকলেও এদিক ওদিক ছুটছুটি করতে থাকে।
এবার তাকে ঘরের বাহিরে বের করে দিতে চাইলে তাও যাইতে রাজী না।
যার জন্য কৌশল করে বিড়ালটাকে রুমের বাহিরে রেখে মেইন গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এমন পরিস্থিতিতে শুরু হইল তার বিভিন্ন শুর করা মায়াবী করুন শুরে কান্না জরিত বিলাপ।
ঐ বিলাপ শুনে বাধ্য হয়ে আমার স্ত্রী দড়জা খুলে দেয়।
এবারও একই অবস্থা।
প্রসবের পরে বাচ্চারা যেন ভালো ভাবে থাকতে পারে এমন এক উপযুক্ত জায়গার তার দরকার।
এভাবে প্রায় ঘন্টাখানেক তার খোজা খুজিতে চলে যায়।
খাটের নিচে বা অন্য কোথাও নয়, দেখে শুনে সে ছবিতে দেওয়া এই জায়গাটাকে পছন্দ করে নেয়।
অগত্যা কি আর করা তাকটাতে যেসব কাপড় চোপর ছিল সেইসব সরিয়ে এই জায়গাটাই তাকে দেওয়া হইল।
এইখানে যাওয়ার সাথে সাথেই সে প্রথম বাচ্চাটি প্রসব করে আর চেটে পুটে বাচ্চাটাকে পরিষ্কার করতে থাকে।
এভাবে একে একে এখানেই সে মোট ৪ টি বাচ্চা প্রসব করে। বাচ্চাগুলো ফুরফুরে হয়ে গেলে একটু গরম থাকার জন্য দুপরের দিকে একটা কাপড় বিছিয়ে দেই।
আশ্চার্য হলেও সত্য এর অনেক ক্ষন পরে কেন জানিনা বিড়ালটি নিজে মুখে করে একটা বাচ্চা মাটিতে নামিয়ে রেখে দেয়।
বচ্চাটির কান্না শুনে আমি ঐ রুমে গিয়া বাচ্চাটি তুলে দিতে চাইলে আমার স্ত্রী আমাকে বাঁধা দিয়ে বলে দেখি কি করে।
মনে হয় বাচ্চাটি কোন ভুলকরেছে তাই হয়তো শাস্তি দেওয়ার জন্য বিড়ালটি নিজেই মুখে করে বাচ্চাটাকে নিচে নামিয়ে রেখেছে।
মায়ের থেকে দূরে থাকাতে মায়ের গায়ের পরশ না পাওয়াতে বাচ্চাটার কান্না আর থমেনা।
কিছুক্ষন পরে বিড়ালটি ঐখান থেকে নেমে মুখ দিয়া কামরে আবার তুলে নিয়ে কোলের মধ্যে রেখে দুধ খাওয়ােইয়ে শান্ত করে।
এখানে লক্ষনীয় বিষয় হইল বিড়ালটি কেন এমনটা করল।
আরো অবাক করা ঘটনা হইলো বিড়ালটি সেই সকাল ১০ টার দিকে বাচ্চা দেওয়ার পর ঐ বাচ্চাটাকে একবার নিচে নামানো আর একবার উঠানো ছাড়া আর একবারের জন্য ও ঐখান থেকে সরে নাই।
এখন রাত প্রায় ১টা।
এখনও পর্যন্ত বিড়ালটি বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য কোলে আগলে রেখে শুয়ে আছে ।
অথচ বাচ্চা দেওয়ার পর বিড়ালটির পেট পুরো খালী থাকার কথা।
তা সত্যেও মা বিড়ালটি এক বারের জন্যও খাবার খাইতে তার খাওয়ার জায়গায় যায় নাই এবং এখন পর্যন্ত আর কোন খাবারও খায় নাই।
এই বিড়ালটি বাচ্চা রেখে এই রাতে আর খাবার খাবে বলে মনে হয়না।
তবে কি একেই বলে মায়ের মমতা মাখা দায়ীত্ব।
একটা বিড়াল তথা হিংস্ত্রো জানোয়র যদি তার বাচ্চাদের এই কয় দিন তার যঠরে রেখে সেই সন্তানের জন্য এমন ত্যাগ শীকার করতে পারে।
তাহলে মাননুষ জন্ম দিতে গিয়া একজন মা তার সন্তানকে ১০ মাস ১০ দিন যঠরে রাখার পর কতটা যত্ন নিয়া কতটা সতর্ক অবলম্ভন করে বাচ্চা জন্ম দেয় এবং নিজের কতটা মূল্যবাণ সময় ও আনন্দ আহলাদ বিষর্জন দিয়া ঐ বাচ্চাকে লালন পালন করে থাকে।
বিড়ালটির এমন আচরণের মধ্যে মানুষের জন্য কি ভাবনার মতো কিছুে আছে ?
No comments